ভৌগোলিক, রাজনৈতিক কিংবা অর্থ সামাজিক; যেকোনো বিবেচনাতেই দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ভারত-পাকিস্তান। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের মধ্যে বিরোধ প্রায় লেগেই থাকে। সীমান্তে উত্তেজনাও দেখা যায় প্রায়শই। সরাসরি যুদ্ধে না জড়ালেও দুদেশের মধ্যে স্নায়ু যুদ্ধটা চলমানই থাকে। তাই ভবিষ্যতে অনাকাঙ্ক্ষিত যুদ্ধ বাধলে তার জন্য প্রস্তুতিও আছে দুদেশের। সামরিক শক্তিমত্তার ব্যাপারটি নিয়েও তাই আলোচনা হয় বেশ জোরেশোরেই।সামরিক শক্তির দিক থেকে ভারত যেমন কিছু দিক দিয়ে এগিয়ে। তেমনি পাকিস্তানও বেশ কিছু দিক দিয়ে পেছনে ফেলেছে ভারতকে। এই যেমন- পাকিস্তানের নৌবাহিনী এয়ার-ইন্ডিপেনডেন্ট প্রপালশন (আএইপি) প্রযুক্তির ক্ষেত্রে ভারতের চেয়ে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি অর্জন করেছে। আর ভবিষ্যতেও অগ্রগতি প্রত্যাশিত।
দ্য এক্সপ্রেস ট্রিবিউনের প্রতিবেদন অনুসারে, পাকিস্তান নৌবাহিনী এআইপি প্রযুক্তি গ্রহণে ভারতীয় নৌবাহিনীকে ছাড়িয়ে গেছে। নতুন করে চীনা-নির্মিত হ্যাঙ্গর-শ্রেণীর সাবমেরিনগুলি আগামীতে পাকিস্তানের বহরে যোগ দিতে প্রস্তুত রয়েছে বলেও জানা গেছে।ভারতের সাম্প্রতিক ষষ্ঠ সংযোজন সাবমেরিন পি-৭৫ স্কোরপেন প্রকল্প। এটি একটি স্টিলথ ফ্রিগেট এবং গাইডেড মিসাইল ডেস্ট্রয়ার প্রযুক্তির হলেও এটি এখনও পাকিস্তানের সক্ষমতার চেয়ে অনেক পিছিয়ে। ভারতের নৌ বহরে আধুনিক প্রযুক্তিতে সজ্জিত কোনও সাবমেরিন নেই। অন্যদিকে, পাকিস্তান ইতোমধ্যেই তিনটি ফরাসি আগোস্তা-৯০বি (Agosta-90B) সাবমেরিন (খালিদ, সাদ এবং হামজা) তার বহরে যুক্ত করেছে।অন্যদিকে নতুন করে চীনের তৈরি হ্যাঙ্গর-শ্রেণীর সাবমেরিনগুলি আগামী ২০২৩ সালের মধ্যে পাকিস্তান নৌবাহিনীতে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর সেটি হলে পাকিস্তানের এআইপি সজ্জিত সাবমেরিনের মোট সংখ্যা হবে তখন ১১। আর এই সাবমেরিনগুলি পানির নিচে পাকিস্তানের নৌ সক্ষমতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে।
এছাড়াও আগামীতে পাকিস্তানের নৌ সম্প্রসারণ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে ৫০টি যুদ্ধজাহাজ নিজেদের বহরে যুক্ত করা। যার মধ্যে ২০টি বড় জাহাজ, ফ্রিগেট এবং কর্ভেট। পাশাপাশি, একটি শক্তিশালী সাবমেরিন বহর তৈরি করা যেখানে ১১টি সাবমেরিন থাকবে।পাকিস্তান নৌবাহিনীর প্রধান অ্যাডমিরাল নাভিদ আশরাফ চীনা গণমাধ্যমকে বলেছেন, চারটি হ্যাঙ্গর-শ্রেণীর সাবমেরিন নির্মাণের কাজ সময়সূচি অনুযায়ী এগিয়ে চলছে।তিনি বলেন, ‘এই সাবমেরিনগুলি পাকিস্তানের নৌ সক্ষমতাকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করবে। নৌবাহিনীকে শক্তিশালী অস্ত্রের সাথে বিভিন্ন অপারেশন পরিচালনা করার ক্ষমতা প্রদান করবে। প্রকল্পটির কাজ এগিয়ে চলেছে। আমরা আশা করি, এই সাবমেরিনগুলি শিগগিরই পাকিস্তান নৌবাহিনীর বহরের অংশ হবে।’